ডেইলি গাজীপুর ( সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ) : রেডিওথোরপির মাধ্যমে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবায় বর্তমান বিশ্বে মেডিক্যাল লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলজী বিভাগে যুক্তরাজ্য থেকে আমদানীকৃত সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা সম্বলিত সর্বাধুনিক মেডিক্যাল লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার ১৮ মার্চ ২০২০ইং তারিখ সকাল ১১টায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে এফ-ব্লকে প্রধান অতিথি হিসেবে লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিন-এর শুভ উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের মাননীয় সচিব জনাব মোঃ আলী নূর। সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিভাগীয় চেয়ারম্যানের বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. সারওয়ার আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সম্মানিত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক, এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য কাজ করে গেছেন। মুজিব শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সারের রোগীদের সেবার জন্য লাইনাক মেশিন চালু করা হয়েছে। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি কোবল্ট-৬০ (ঈড়নধষঃ-৬০) মেশিনও ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়া হবে। করোনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৬২টি দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ২ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। করোনা রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। বিদেশ ফেরতদের অবশ্যই সেলফ আইসোলেশনে থাকতে হবে। করোনা মোকাবেলায় কোয়ারেন্টাইনই সর্বোত্তম পদ্ধতি। চীন এই পদ্ধতিতে সফল হয়েছে। বিদেশ ফেরতরা এই নির্দেশ না মানলে তাকে জেলেও যেতে হতে পারে।
মাননীয় সচিব জনাব মোঃ আলী নূর বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাধুনিক লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিন চালু বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় একটি বড় অর্জন উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো। করোনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনাকে মোকাবেলা করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছা ও আর্থিক সহায়তা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহায়তা, নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থের যোগান নিশ্চিত করাসহ যাথাযথ মনিটরিং এর কারণে সেন্টার অব এক্সিলেন্স খ্যাত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিন চালু করা সম্ভব হয়েছে। এটা হল মুজিব বর্ষে ক্যান্সার রোগীদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার।
স্বাগত বক্তব্যে সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিন সংযোজন সেই উন্নয়নেরই ফসল।
সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছা ও আর্থিক সহায়তা ছাড়া লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিন ক্রয় সম্ভব হতো না। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও সহায়তায় এবং বর্তমান প্রশাসনের নিরলস প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ও চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা ও গবেষণায় দিন দিন আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
বিভাগীয় চেয়ারম্যানের অধ্যাপক ডা. সারওয়ার আলম জানান, ফোটন ও ইলেকট্রন এনার্জি সম্বলিত সর্বাধুনিক লিনিয়ার এক্সিলেরেটর মেশিনে মানবদেহের যেকোনো ক্যান্সার আক্রান্ত কোষে রেডিওথেরাপি দেয়া যায়। এই মেশিনে ৩টি নমিনাল ফোটন এনার্জি ও দুটি হাইডোজ রেট সম্পূর্ণ ফোটন এনার্জি এবং ৬টি ইলেকট্রন এনার্জি সংযুক্ত আছে। এছাড়া আনুষঙ্গিক বিভিন্ন যন্ত্র সংযুক্ত করা হয়েছে। এরমাধ্যমে রোগীর টিউমার লোকালাইজেশন ও ইমেজ সংগ্রহ, কনটউরিং (ঈড়হঃড়ঁৎরহম) ও প্ল্যানিং, সঠিকভাবে রোগীর পজিশনিং এবং সঠিক ডোজ পরিমাপের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা যায়। এই মেশিনের মাধ্যমে ১টি শিফটে ৪০ জন রোগীকে রেডিওথেরাপি দেয়া যায় এবং শিফট বৃদ্ধি করলে অধিক সংখ্যক রোগীকে সেবা দেয়া সম্ভব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক কম ব্যয়ে এই সেবাটি নিতে পারবেন। ছবি: মোঃ আরিফ খান। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।